- English
- বাংলা
Table of Contents
This is an old revision of the document!
৫. কেমিকেল যুগ
জুনো: আমাদের নৌকা এখন ব্রহ্মপুত্র থেকে যমুনায় যাচ্ছে, কেমিকেল যুগের কথা শুরু করার এখনি সময়, কারণ মথুরার কৃষ্ণ আর আগ্রার তাজমহলের কারণে ইয়ামুনার প্রাণের গভীর রূপক সম্পর্ক আছে। তবে এই যুগ শুরু করতে হলে আমাদেরকে আগে পৃথিবীর ৪৫০ কোটি বছরের ইতিহাস একটু ঝালাই করে নিতে হবে, কারণ এর মধ্যে প্রথম ৪০০ কোটি বছরই হবে আমাদের পার্থিব কেমিকেল যুগ।
সক্রেটিস: তার মানে কেমিকেল যুগে আমরা শুধু পৃথিবীতে ফোকাস করব?
জুনো: শুধু একটা গ্রহের জটিল কেমিস্ট্রির ইতিহাসই যেহেতু আমরা জানি সেহেতু এই যুগে পৃথিবী নিয়ে চিন্তা করাই যৌক্তিক হবে। কিন্তু আলোচনা শেষে আমরা সৌরজগতের ভিতরে বা বাইরে অন্য গ্রহে জটিল অণু ও প্রাণ খোঁজার উপায় নিয়েও কথা বলব। আসলে আমাদের প্ল্যান এখানে অনেকটা গ্রহ যুগের মতোই। গ্রহ যুগে হার্মিস মূলত সৌরজগতের উপর ফোকাস করেছিল, কিন্তু শেষে অন্যান্য তারার চারদিকে গ্রহ আবিষ্কার নিয়েও কথা বলেছে।
সক্রেটিস: ভালো প্ল্যান। তাহলে শুরু করো।
1. সমুদ্র ও বাতাস
জুনো: আনুমানিক ৪৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবীর জন্ম। প্রথম ৫০ কোটি বছর পৃথিবীর পৃষ্ঠ অনেক গরম ও আগ্নেয়গিরিতে পরিপূর্ণ ছিল এবং নিজের অক্ষে অনেক জোরে ঘুরছিল, মাত্র ১২ ঘণ্টায় এক বার। তার উপর ভিতরের চারটা গ্রহ নির্মাণের পর বাকি থেকে যাওয়া অনেক পাথরের টুকরা ও ধূমকেতু মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ছিল লেইট হেভি বম্বার্ডমেন্টের সময়। এই যুগের নাম হেডিয়ান এরা। এই যুগের কিছু অক্ষত জিরকন (ZrSiO$_4$) পাওয়া গেছে যা থেকে বুঝা যায় তখনি সমুদ্রের অস্তিত্ব ছিল।
সক্রেটিস: সমুদ্র কিভাবে তৈরি হয়েছে?
জুনো: আগ্নেয়গিরি এবং ক্রাস্টের সব ফাটল দিয়ে পৃথিবীর ভিতর থেকে জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে উঠেছে, এই প্রক্রিয়ার নাম আউটগ্যাসিং। পৃথিবী ঠাণ্ডা হওয়ার পর এসব বাষ্প থেকে মেঘ এবং মেঘ থেকে বৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রের একটা কারণ এই বৃষ্টি। তবে সমুদ্রের পানির একটা বড় অংশ বম্বার্ডমেন্টের সময় গ্রহাণু ও ধূমকেতুর মাধ্যমেও সম্ভবত এসেছে। তখন সম্ভবত পুরো পৃথিবীই সমুদ্রে ঘেরা ছিল, কোনো বড় মহাদেশ ছিল না। সমুদ্র জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল আগ্নেয় দ্বীপ, মানে বিভিন্ন আগ্নেয়গিরির চূড়া। বাষ্প ও পানিতে অক্সিজেন ছিল, জিরকনে অক্সিজেন ছিল, কিন্তু মুক্ত আণবিক অক্সিজেন (O$_2$) তখন বায়ুমণ্ডলে একদমই ছিল না।
সক্রেটিস: বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের বৃদ্ধিই কি এই ফিগারে দেখাচ্ছ?
জুনো: শুধু বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়াই দেখাচ্ছি না, সাথে সমুদ্রের কেমিকেল গঠনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনও দেখানো হয়েছে। হেডিয়ানের পর আর্কিয়ান যুগ শুরু হয় ৪০০ কোটি বছর আগে থেকে। তবে পৃথিবীর ক্রাস্ট মোটামুটি স্থির হতে শুরু করে ৩৮০ কোটি বছর আগে, তখনই বর্তমান মহাদেশগুলোর পূর্বসূরি বিভিন্ন মাইক্রো-কন্টিনেন্টের জন্ম শুরু। ফিগারে দেখতে পাচ্ছ, ৩৫০ কোটি বছর আগে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মাইক্রোবায়াল ম্যাট ছিল, মানে সমুদ্রের পানির পৃষ্ঠে স্তরে স্তরে সাজানো সায়ানোব্যাক্টেরিয়ার কলোনি। সবার উপরের স্তরের সায়ানোব্যাক্টেরিয়া সূর্যের আলো, কার্বন ডাই অক্সাইড ও পানি মিশিয়ে অক্সিজেন তৈরি শুরু করে দিয়েছিল তখনি, যে-প্রসেসের নাম ফটোসিন্থেসিস। এসব ম্যাট সময়ের সাথে পুরু হতে হতে এক সময় পাথরে পরিণত হয়েছে, যেসব পাথরের নাম স্ট্রোমাটোলাইট। স্ট্রোমাটোলাইট বিশ্লেষণ করেই আমরা জানতে পেরেছি মুক্ত অক্সিজেন কত আগে তৈরি হতে শুরু করেছিল।
সক্রেটিস: ফিগারের এক্স এক্সিসে সময়, কিন্তু ওয়াই এক্সিসে তো ঠিক অক্সিজেনের পরিমাণ দেখা যাচ্ছে না, দেখা যাচ্ছে বায়ুমণ্ডলীয় চাপে অক্সিজেনের অবদানের পরিমাণ, ১ মানে ১০০% আর ০.১ মানে ১০%, ০.০১ মানে ১%। এটা কি সরাসরি অক্সিজেনের পরিমাণই বুঝাচ্ছে?
জুনো: হ্যাঁ, ধরে নিতে পারো। বর্তমানে অক্সিজেনের পরিমাণ প্রায় ২১% এবং এটা শূন্য থেকে বাড়া শুরু করেছে ৩২০ কোটি বছর আগে থেকে, যেখান থেকে ড্যাশ-লাইনটা শুরু। প্রথম দিককার ফটোসিন্থেসিস অক্সিজেনিক ছিল না, মানে তাতে অক্সিজেন তৈরি হচ্ছিল না। এ সময়কার ব্যাক্টেরিয়া লোহার সাথে অক্সিজেন ও পানি মিশিয়ে সমুদ্রের তলায় আয়রন কম্পাউন্ড তৈরি করেছিল। অক্সিজেনিক ফটোসিন্থেসিস ভালোভাবে শুরু হয় ৩০০ কোটি বছর আগে থেকে। এই একই সময় মাইক্রো-কন্টিনেন্ট জোড়া লেগে বিভিন্ন মহাদেশ রূপ নিতে শুরু করে। নতুন তৈরি অক্সিজেন সমুদ্রতলের আয়রনের সাথে বিক্রিয়া করে পুরো সমুদ্র আয়রনে ভরে দিয়েছিল। ফিগারে ‘আয়রন ওশান’ বলতে এটাই বুঝানো হয়েছে।
2. পিরিয়ডিক টেবিল
3. পৃথিবীতে প্রাণ
4. হ্যাবিটেবল জোন
5. প্রাণ খোঁজার উপায়