- English
- বাংলা
Table of Contents
This is an old revision of the document!
আলমাজেস্ট থেকে রেভলুশনস
গ্রিক এস্ট্রোনমার টলেমির আলমাজেস্ট প্রকাশিত হয়েছিল ১৫০ সালের দিকে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায়, আর পোল্যান্ডের পাদ্রি কোপার্নিকাসের অন দ্য রেভলুশনস (আমরা এখানে শুধু ‘রেভলুশনস’ ডাকব) প্রকাশিত হয়েছিল ১৫৪৩ সালে জার্মানির নুরেমবার্গ থেকে। টলেমির বিশাল সিন্থেসিস সম্ভব হয়েছিল তার আগের দুই হাজার বছর ধরে ইরাক সিরিয়া ও গ্রিসে চলতে থাকা সিস্টেমেটিক অব্জার্ভেশনের কারণে। কোপার্নিকাসের বিরাট এনালাইসিস সম্ভব হয়েছিল তার আগের দেড় হাজার বছর ধরে ভারত চীন ইউরোপ ও ইসলামি বিশ্বে চলতে থাকা সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণের কারণে। এস্ট্রোনমির পাঁচ হাজার বছরের ইতিহাসে এই দুই বইয়ের জায়গা সবার উপরে, কারণ এদের সামাজিক প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি। কোপার্নিকাসের বইয়ের নাম ‘রেভলুশনস’ ছিল বলেই হয়ত ‘রেভলুশন’ মানে আজ হয়ে গেছে বিপ্লব, কোপার্নিকাসের ‘রেভলুশনস’ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিল। এই আর্টিকেলে আমরা দেখব ‘আলমাজেস্ট’ থেকে ‘রেভলুশনস’ পর্যন্ত মানুষ কিভাবে মহাবিশ্বের একটা “কাজের মডেল” তৈরির চেষ্টা করেছে এবং ‘রেভলুশনসের’ মডেল শেষ পর্যন্ত কিভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
1. এনুমা আনু এনলিল
আলমাজেস্টের কাহিনি শুরু করতে হবে আরেকটা বই থেকে: ইরাকের ব্যাবিলনে যিশুর এক হাজার বছর আগে লেখা এস্ট্রোলজির বই ‘এনুমা আনু এনলিল’ (যখন আনু ও এনলিল)। এতে ইরাকি এস্ট্রোনমির প্রায় দুই হাজার বছরের ঐতিহ্য ব্যবহার করা হয়েছিল। ‘এনুমা’ ওমেন, মানে অশনি সংকেতের বই। গ্রিকদের মতো ব্যাবিলনিয়ানদের এস্ট্রোলজির বিষয় মানুষের ভাগ্য আবিষ্কার ছিল না, তাদের মাথাব্যথা ছিল ওমেন নিয়ে। আকাশে তারা এমন কিছু নিয়মিত ঘটনা চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন যাদেরকে ওমেন হিসেবে সাব্যস্ত করা যায়। এসব ওমেন আগে থেকে বুঝতে পারলে, মানে প্রেডিক্ট করতে পারলে, সঠিক পূজা ও আচারের মাধ্যমে খারাপ ভবিষ্যৎ ঠেকানো সম্ভব বলে তারা বিশ্বাস করতেন।
‘এনুমা’র লেখকরা অন্তত সাত শতাব্দী ধরে স্থির তারাদের সাপেক্ষে চাঁদ সূর্য ও পাঁচটি গ্রহের গতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন বলেই প্রথম কসমোলজিকেল মডেল বানানো গিয়েছিল, আলমাজেস্ট যার চূড়ান্ত পরিণতি। তারা চাঁদের বারো মাসের (৩৫৪ দিন) সাথে সূর্যের এক বছর (৩৬৫ দিন) মিলানো নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। যিশুর ছয়শ বছর আগে ব্যাবিলনিয়ানরা মেটনিক সাইকেলের খোঁজ পেয়েছিল, মানে বুঝতে পেরেছিল চাঁদের ২৩৫ মাস (২৯.৫ দিন করে মোট ৬৯৩২ দিন) সূর্যের ১৯ বছরের (৩৬৫.২ দিন করে মোট ৬৯৩৮ দিন) প্রায় সমান। আর ১৯ বছরে যেহেতু ২২৮ মাস হয় (যা ২৩৫ থেকে ৭ মাস কম) সেহেতু ১৯ বছরের মধ্যে মোট ৭টা মাস যোগ করতে হবে, মানে ১২ বছর হবে বারো মাসের, আর ৭ বছর হবে তের মাসের।