Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


Differences

This shows you the differences between two versions of the page.

Link to this comparison view

Both sides previous revisionPrevious revision
play [2023/11/25 02:21] asadplay [2023/11/25 02:22] (current) asad
Line 1: Line 1:
 ====== খেলা ====== ====== খেলা ======
-হক তাঁর অসংখ্য সুন্দর নামের মাধ্যমে তাঁর সব এসেন্স দেখতে চেয়েছিলেন, বা বলতে পারো তাঁর সামগ্রিক এসেন্স দেখতে চেয়েছিলেন এমন এক সর্বাঙ্গীণ সত্তার মধ্যে যে জগতের সবকিছুর বাইরে পরিব্যাপ্ত ও ভিতরে অন্তর্নিহিত এবং অস্তিত্ব যার একটি গুণ। যার দৌলতে তাঁর রহস্য প্রকাশিত হবে তাঁর নিজের কাছে। কারণ নিজের মাধ্যমে নিজেকে দেখা আর আয়নার মতো অন্য কিছুর মাধ্যমে নিজেকে দেখা এক না। কারণ আয়না দ্রষ্টার কাছে তার নিজের রূপ প্রকাশিত করে ‘মহল’ নামের এক অবস্থানে। আয়না যদি না থাকে, আয়নামহল যদি দ্রষ্টার সামনে না আসে, তবে দ্রষ্টা নিজেকে দেখতেই পারবে না। 
- 
-যখন হক গোটা কসমস অস্তিত্বে আনেন তখন তা ছিল কেবল একটি রূপ, তার মধ্যে কোনো রূহ ছিল না, যেন পালিশ-না-করা আয়নার মতো। খোদার ক্ষমতাই এই রকম যে তিনি এমন কোনো স্থান নির্মাণ করেন না যা এক সময় রহিমের রূহ গ্রহণ করবে না খোদার ফুঁকে-দেয়া নিঃশ্বাস টেনে নেয়ার মাধ্যমে। প্রভুর নিরন্তর ব্যক্ত প্রবাহ গ্রহণ করার যে-প্রবণতা রূপের মধ্যে আগে থেকে ছিল সেটাই বাস্তবায়িত হয় এই নিঃশ্বাসে। গ্রহীতা ছাড়া বলার মতো আর কিছু নাই, গ্রহীতা নিজেও বিধাতার পবিত্র ধারা। তাঁর থেকে আসে কসমসের সবকিছু, সবার সূচনা, সবার সমাপ্তি। ব্রহ্মাণ্ড ও তার সবকিছু শেষে তাঁর কাছে ফিরে যায় যেভাবে তাঁর থেকে শুরু হয়েছিল। 
- 
-কসমস ব্যক্ত হওয়ার জন্য দরকার ছিল আয়নাটি পালিশ করা। এবং আদম একইসাথে ছিলেন সেই আয়নার জেল্লা ও সেই ছবির আত্মা। জগতের এই ছবিকে সাধারণ লোকে 'মহামানুষ' নামে ডাকে এবং ফেরেশ্তারা এই ছবির বিভিন্ন শক্তি। মানুষের শরীরের সাথে তার আত্মা ও অনুভূতির যে-সম্পর্ক মহাবিশ্বের সাথে ফেরেশ্তাদের সেই সম্পর্ক। প্রতিটি শক্তি নিজেই নিজের ঘোমটা যার কারণে সে নিজের চেয়ে বড় কিছু দেখতে পারে না। তবে তারা বিশ্বাস করে মানবছবির শক্তি হওয়ার কারণে তারা খোদার প্রতিটি তুঙ্গস্থান ও উন্নত মঞ্জিলের সাথে পরিচিত, কারণ এই ছবির মধ্যে আছে আল্লার সর্বব্যাপিতা, যার সাথে জড়িত আছে এক দিকে 'ডিভাইন ব্যক্তি' আরেক দিকে সব সত্যের সত্য। কারণ এই ছবি রূপ গ্রহণ করার সময় তার সব গুণের মাধ্যমে এমন এক সামগ্রিক প্রকৃতি বানিয়েছে যা জগতের উঁচু নিচু সব আধার ধারণ করে। 
- 
-বুদ্ধি এটা যৌক্তিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বুঝতে পারে না। এই ধরনের বোধ কেবল আসতে পারে খোদার দেয়া কাশফ বা দিব্যদৃষ্টির মাধ্যমে। কেবল দিব্যদৃষ্টি দিয়েই জগতের ছবির সেই ভিত্তি দেখা যায় যা আত্মা গ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে। এই জিনিসকে আমরা বলি মানুষ বা খোদার খলিফা। তাকে মানুষ বলি কারণ তার জন্ম ছিল সবচেয়ে সাধারণ এবং সে সব বাস্তবতাকে ধারণ করে। চোখের সাথে তার মণির যে সম্পর্ক খোদার সাথে মানুষের সেই সম্পর্ক। খোদাকে যেমন হক বা সত্য বলা হয় মানুষকে তেমন ইনসান বলার কারণ ইনসান শব্দের এক অর্থ চোখের মণি, যে-মণি দিয়েই আমরা দেখি। মানুষের মাধ্যমেই খোদা তাঁর সৃষ্টির দিকে তাকান ও তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন, মানুষ একইসাথে খোদার দৃষ্টি ও দয়া। এই মানুষ সময়ে সৃষ্ট হয়েও চিরন্তন, জন্ম নেয়া সত্ত্বেও চিরঞ্জীব। মানুষ সেই শব্দ যা সীমান্তের মতো একইসাথে মিলিত করে ও আলাদা করে। তার মাধ্যমে জগতের অস্তিত্ব সম্পূর্ণ হয়, দুনিয়ার সাথে তার সম্পর্ক সিলের সাথে মোহরের মতো। মানুষ সেই মোহর ও স্বাক্ষর যার মাধ্যমে খোদা তাঁর গুপ্তধনের সিন্দুকে খোদাই করে দেন তাঁর সিল। এ-কারণেই খোদা তাকে বলেছেন খলিফা বা প্রতিনিধি, সিল যেভাবে গুপ্তধন রক্ষা করে মানুষ সেভাবেই তাঁর সৃষ্টি রক্ষা করে। যতদিন সিন্দুকে রাজার সিল আছে ততদিন তাঁর অনুমতি ছাড়া তা খোলার সাহস কারো নেই। মানুষকে মালিক তাঁর মুলুকের রক্ষক করে পাঠিয়েছেন। যতদিন জগতে ‘কামিল’ মানুষ আছে ততদিন জগতের অস্তিত্ব যাবে না। 
- 
-তোমরা কি দেখতে পাও না যে মানুষ চলে গেলে এই জগতের সিন্দুকের সিল ভেঙে যাবে, এবং সিন্দুকের ভিতরে যা-কিছু সত্য ছিল তার কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না, তার ভিতরের সবকিছু একে অপরের সাথে মিলে একাকার হয়ে অন্য এক চূড়ান্ত জগতে স্থানান্তরিত হবে, এবং মানুষ তখন সেই অন্য জগতের সিন্দুকেরও চিরন্তন সিল হিসেবে টিকে থাকবে? 
- 
-খোদার ছবি গঠন করা সব নাম ব্যক্ত হয় মানুষের নির্মাণে, এবং এই নির্মাণ এমন পর্যায়ের যে তা সব অস্তিত্ব সংবৃত ও সংহত করে। এই কারণেই ফেরেশ্তাদের বিরুদ্ধে খোদা যুক্তি দিতে পেরেছিলেন। সুতরাং সাবধান হও কারণ খোদা হয়ত অন্যের উদাহরণ দিয়ে তোমাদেরকে সতর্ক করেছেন, এবং ভেবে দেখো তিনি কোত্থেকে অভিযোগ হাজির করেছেন। কারণ ফেরেশ্তারা বুঝতে পারেনি এই নতুন খলিফা বানানোর অর্থ, তারা জানত না হকের সামনে সবচেয়ে স্বাভাবিক ইবাদত কি হওয়া উচিত। কারণ কারো এসেন্সে যা দেয়া আছে তার বাইরে কেউ হক সম্পর্কে কিছু জানতে পারে না। 
- 
-ফেরেশ্তাদের নেই আদমের মতো সর্বাঙ্গীণতা, যে-কয়টা দিব্য নাম তারা পেয়েছে সেগুলো দিয়েই তারা খোদার পবিত্রতা ও গৌরবের কথা বলে, তারা জানে না যে খোদার এমন অনেক নাম আছে যেগুলো সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নেই, যেগুলোর মাধ্যমে আদমের মতো সম্পূর্ণভাবে তারা খোদার পবিত্রতা ও গৌরবের কথা বলতে পারে না। এই করুণ দশায় ছিল বলেই তারা মানুষের নির্মাণ সম্পর্কে বলেছিল, ‘তুমি এখানে এমন কাউকে বসাবে যে এখানে অনাচার করবে?’ অথচ এই বিদ্রোহের মাধ্যমে তারাই অনাচার করেছিল, আদম সম্পর্কে তারা যা বলেছিল তা আসলে হকের প্রতি তাদের নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করে।  
  
play.1700904105.txt.gz · Last modified: 2023/11/25 02:21 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki