Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


Differences

This shows you the differences between two versions of the page.

Link to this comparison view

Both sides previous revisionPrevious revision
Next revision
Previous revision
om:spinoza [2024/04/10 04:22] asadom:spinoza [2024/04/15 07:36] (current) asad
Line 1: Line 1:
 ====== স্পিনোজা ====== ====== স্পিনোজা ======
 স্পিনোজা ১৭--১৮ শতকে ইউরোপিয়ান এনলাইটেনমেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক। তার প্রধান বই 'থিওলজিকেল-পলিটিকেল ট্রিটিজ' (১৬৭০, নেদারল্যান্ড) এবং 'এথিক্স' (১৬৭৭, নেদারল্যান্ড)। 'এথিক্সে' তিনি ইউক্লিডের জ্যামিতিক মেথডে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে গড আছেন এবং এই গডকে জানার চেষ্টা করাই মানুষের জন্য সর্বোত্তম গুড। তার মতে গড ও নেচার (খোদা ও প্রকৃতি) এক। স্পিনোজা ১৭--১৮ শতকে ইউরোপিয়ান এনলাইটেনমেন্টের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক। তার প্রধান বই 'থিওলজিকেল-পলিটিকেল ট্রিটিজ' (১৬৭০, নেদারল্যান্ড) এবং 'এথিক্স' (১৬৭৭, নেদারল্যান্ড)। 'এথিক্সে' তিনি ইউক্লিডের জ্যামিতিক মেথডে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে গড আছেন এবং এই গডকে জানার চেষ্টা করাই মানুষের জন্য সর্বোত্তম গুড। তার মতে গড ও নেচার (খোদা ও প্রকৃতি) এক।
 +
 +{{https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/4/43/Spinoza_Nicolas_Dings_Zwanenburgwal_Amsterdam.JPG?nolink}}
  
 ===== এথিক্স ১: খোদা ও প্রকৃতি ===== ===== এথিক্স ১: খোদা ও প্রকৃতি =====
Line 60: Line 62:
 | প্র২৪ | খোদার বানানো কোনো জিনিসের এসেন্সের মধ্যে অস্তিত্ব নাই | স১, প্র১৪ক১ | | প্র২৪ | খোদার বানানো কোনো জিনিসের এসেন্সের মধ্যে অস্তিত্ব নাই | স১, প্র১৪ক১ |
 | প্র২৫ | খোদা কার্যকরী কারণ সবকিছুর শুধু অস্তিত্বের না, এসেন্সেরও | স৫, এ৪, প্র১৫, প্র১৬ | | প্র২৫ | খোদা কার্যকরী কারণ সবকিছুর শুধু অস্তিত্বের না, এসেন্সেরও | স৫, এ৪, প্র১৫, প্র১৬ |
 +| প্র২৫ক | নির্দিষ্ট সব জিনিস খোদার গুণের প্রভাব, বা খোদার গুণ প্রকাশের নির্দিষ্ট উপায় অর্থাৎ রূপ | স৫, প্র১৫ |
 +| প্র২৫স্ক | খোদা যেভাবে নিজের কারণ সেভাবেই সবকিছুর কারণ | প্র১৬ |
 | প্র২৬ | যে একটা ফল দিতে নির্ধারিত তাকে সেজন্য নির্ধারণ করেছেন খোদা, যে খোদার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়নি সে নিজে নিজেকে কোনো ফল দিতে নির্ধারণ করতে পারে না | প্র১৬, প্র২৫ | | প্র২৬ | যে একটা ফল দিতে নির্ধারিত তাকে সেজন্য নির্ধারণ করেছেন খোদা, যে খোদার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়নি সে নিজে নিজেকে কোনো ফল দিতে নির্ধারণ করতে পারে না | প্র১৬, প্র২৫ |
 | প্র২৭ | খোদা যাকে কোনো ফল দিতে নির্ধারণ করেছেন সে নিজেকে অনির্ধারিত করতে পারে না | এ৩ | | প্র২৭ | খোদা যাকে কোনো ফল দিতে নির্ধারণ করেছেন সে নিজেকে অনির্ধারিত করতে পারে না | এ৩ |
Line 83: Line 87:
  
 **প্রপজিশন ১৬--২০** খোদার সাথে তার রূপগুণের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলে। খোদার স্বভাবই এমন যে তার থেকে অসংখ্য রূপে অসংখ্য জিনিস আসে, প্রকাশিত হয়, প্রবাহিত হয়। খোদা স্বাধীন (প্র১৭) কিন্তু স্বেচ্ছাধীন না, কারণ একাধিক চয়েসের মধ্যে বেছে নেয়ার ধারণাই খোদার স্বভাবের পরিপন্থী। খোদা শুধু তার স্বভাবের সূত্র অনুযায়ী কাজ করেন। তার চয়েস বলে কিছু নাই। খোদার অসংখ্য গুণের প্রতিটার আছে অসংখ্য রূপ। সত্ত্বগুণ সব রূপের আগে, যে-কারণে খোদার একত্ব বাতিল হয় না। তার মানে এই না যে খোদা নিখিল জগতের বাহ্যিক বা বহির্ভূত কোনো কারণ, খোদার 'বাইরে' কিছু আছে কল্পনা করাটাই সত্ত্বের ধারণার পরিপন্থী। কবওয়েব থেকে কসমিক ওয়েব পর্যন্ত সবকিছুই খোদার গুণের রূপ বা তার স্বভাবের প্রভাব। রূপ হিসেবে ভাবলে আমাদেরকে খোদার 'বৈশিষ্ট্য' মনে হয় যেভাবে 'কালো' আমার ত্বকের বৈশিষ্ট্য। প্রভাব হিসেবে ভাবলে আমাদেরকে খোদার 'ফল' মনে হয়, যেভাবে ঢিল মারার ফল হয় ভাঙা কাঁচ। কালো আমার ভিতরে, ঢিল কাঁচের বাহিরে। কোন উপমা বেশি সঠিক? খোদা অন্তর্নিহিত কারণ হলে আমরা তার বৈশিষ্ট্য, কিন্তু রক্তমাংসের মূর্ত জিনিস কিভাবে কারো বৈশিষ্ট্য হয়, বৈশিষ্ট্য তো বিমূর্ত জিনিস। আবার খোদা কেবল আমাদের 'কারণ' হলে তাকে তার প্রভাবের বহির্ভূত মনে হয় যা স্পিনোজা অস্বীকার করেছেন। সমাধান একটাই। এই দুই বিপরীত ধারণা একসাথে করে আমরা বলি, খোদা নিখিলের 'অন্তর্নিহিত কারণ' যেভাবে আমি আমার মুখের সব এক্সপ্রেশনের অন্তর্নিহিত কারণ। সবকিছু একইসাথে খোদার রূপ ও প্রভাব। যেদিকেই তাকাও দেখবে খোদার চেহারা। **প্রপজিশন ১৬--২০** খোদার সাথে তার রূপগুণের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলে। খোদার স্বভাবই এমন যে তার থেকে অসংখ্য রূপে অসংখ্য জিনিস আসে, প্রকাশিত হয়, প্রবাহিত হয়। খোদা স্বাধীন (প্র১৭) কিন্তু স্বেচ্ছাধীন না, কারণ একাধিক চয়েসের মধ্যে বেছে নেয়ার ধারণাই খোদার স্বভাবের পরিপন্থী। খোদা শুধু তার স্বভাবের সূত্র অনুযায়ী কাজ করেন। তার চয়েস বলে কিছু নাই। খোদার অসংখ্য গুণের প্রতিটার আছে অসংখ্য রূপ। সত্ত্বগুণ সব রূপের আগে, যে-কারণে খোদার একত্ব বাতিল হয় না। তার মানে এই না যে খোদা নিখিল জগতের বাহ্যিক বা বহির্ভূত কোনো কারণ, খোদার 'বাইরে' কিছু আছে কল্পনা করাটাই সত্ত্বের ধারণার পরিপন্থী। কবওয়েব থেকে কসমিক ওয়েব পর্যন্ত সবকিছুই খোদার গুণের রূপ বা তার স্বভাবের প্রভাব। রূপ হিসেবে ভাবলে আমাদেরকে খোদার 'বৈশিষ্ট্য' মনে হয় যেভাবে 'কালো' আমার ত্বকের বৈশিষ্ট্য। প্রভাব হিসেবে ভাবলে আমাদেরকে খোদার 'ফল' মনে হয়, যেভাবে ঢিল মারার ফল হয় ভাঙা কাঁচ। কালো আমার ভিতরে, ঢিল কাঁচের বাহিরে। কোন উপমা বেশি সঠিক? খোদা অন্তর্নিহিত কারণ হলে আমরা তার বৈশিষ্ট্য, কিন্তু রক্তমাংসের মূর্ত জিনিস কিভাবে কারো বৈশিষ্ট্য হয়, বৈশিষ্ট্য তো বিমূর্ত জিনিস। আবার খোদা কেবল আমাদের 'কারণ' হলে তাকে তার প্রভাবের বহির্ভূত মনে হয় যা স্পিনোজা অস্বীকার করেছেন। সমাধান একটাই। এই দুই বিপরীত ধারণা একসাথে করে আমরা বলি, খোদা নিখিলের 'অন্তর্নিহিত কারণ' যেভাবে আমি আমার মুখের সব এক্সপ্রেশনের অন্তর্নিহিত কারণ। সবকিছু একইসাথে খোদার রূপ ও প্রভাব। যেদিকেই তাকাও দেখবে খোদার চেহারা।
 +
 +{{:om:god.webp?nolink|}}
 +
 +পরের পাঁচটি **প্রপজিশন (২১--২৫)** রূপের ধারণা দিয়ে আমাদের ফিজিকেল ও মানসিক ইউনিভার্স বানানোর চেষ্টা করে। খোদার পরম গুণ থেকে যা আসে সব চিরন্তন ও অসীম। সুতরাং গুণ থেকে সরাসরি প্রকাশিত সব রূপ চিরন্তন ও অসীম যাদেরকে বলব 'প্রাথমিক' অসীম রূপ (প্র২১)। প্র২২ বলে, কোনো গুণ থেকে একটা রূপের মাধ্যমে রূপায়িত (পরিবর্তিত) হয়ে যা আসে তাও আবশ্যিক চিরন্তন ও অসীম, এদেরকে বলব 'মাধ্যমিক' অসীম রূপ কারণ এদের জন্ম প্রাথমিক রূপের মধ্যস্থতায়। পরের দুই প্রপজিশন জানায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক অসীম রূপের এসেন্সের মধ্যে অস্তিত্ব নাই, তাদের অস্তিত্বের কারণ তারা নিজেরা না বরং খোদা। খোদার ব্যাপ্তিগুণ থেকে যে প্রাথমিক রূপ আসে তার নাম অসীম গতি, আর চিন্তাগুণ থেকে আসা প্রাথমিক রূপ অসীম বুদ্ধি। অসীম গতি থেকে যে মাধ্যমিক অসীম রূপ আসে তা হলো ফিজিকেল জগতের মৌলিক নিয়মনীতি, অর্থাৎ ইউনিভার্সের গতির সব সূত্র। আর অসীম বুদ্ধি থেকে যে মাধ্যমিক অসীম রূপ আসে তা হলো মানসিক জগতের নিয়মনীতি, অর্থাৎ যুক্তির সব সূত্র। অসীম **গতিসূত্র** অনুসারে যে অসীম সংখ্যক ফিজিকেল বস্তুর জন্ম হয় তারা প্রত্যেকে সসীম রূপ, কিন্তু তাদের একটা অসীম পরম্পরা আছে আমাদের জানামতে কোয়ার্ক থেকে পুরা ইউনিভার্স পর্যন্ত। যত ছোটোর দিকেই যাই আরো ছোট বস্তু পাই, যত বড়র দিকেই যাই আরো বড় বস্তু পাই, কিন্তু সবাই এক অসীম সূত্রে গাঁথা। একইভাবে অসীম **যুক্তিসূত্র** অনুসারে যে অসীম সংখ্যক মানসিক জিনিস তথা চিন্তার জন্ম হয় তারা প্রত্যেকে সসীম রূপ, কিন্তু তাদেরও একটা অসীম পরম্পরা আছে। ফিজিকেল পদার্থের মতোই মানসিক আইডিয়া একে অপরের সাথে এক একক পরম্পরায় সম্পর্কিত। যেমন, হয়ত যেকোনো যুক্তি থেকে শুরু করে সেই যুক্তির আগের সব কারণ খোঁজা যায়, আবার পরের সব ফলও খোঁজা যায়। এই অসীম পরম্পরা থাকার কারণেই সসীম বিচ্ছিন্ন (ডিস্ক্রিট) সব রূপকে এক অসীম অবিচ্ছিন্ন (কন্টিনুয়াস) রূপের অংশ হিসেবে দেখা যায়। অসীম অবিচ্ছিন্ন রূপ যদি সমুদ্রের সার্ফেস হয় তবে সসীম বিচ্ছিন্ন রূপগুলো তার ঢেউ।
 +
 +শেষ প্রপজিশনগুলোর (২৬--৩৬) বিষয় কারণ ও ফল। প্র২৬ থেকে প্র২৮ পড়লে মনে হয়, খোদা সব জিনিসের কারণ, কিন্তু সসীম রূপগুলো নিজেরাও নিজেদের কারণ। 
  
 ===== এথিক্স ২: মন ও মানুষ ===== ===== এথিক্স ২: মন ও মানুষ =====
Line 119: Line 129:
   - স্পিনোজা, অনু. এডুইন কার্লি, //এ স্পিনোজা রিডার: দি এথিক্স এন্ড আদার ওয়ার্কস//, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯৪।   - স্পিনোজা, অনু. এডুইন কার্লি, //এ স্পিনোজা রিডার: দি এথিক্স এন্ড আদার ওয়ার্কস//, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৯৪।
   - স্পিনোজা, অনু. স্যামুয়েল শার্লি, //স্পিনোজা: কমপ্লিট ওয়ার্কস//, হ্যাকেট পাব্লিশিং কোম্পানি, ২০০২।   - স্পিনোজা, অনু. স্যামুয়েল শার্লি, //স্পিনোজা: কমপ্লিট ওয়ার্কস//, হ্যাকেট পাব্লিশিং কোম্পানি, ২০০২।
 +
  
om/spinoza.1712744579.txt.gz · Last modified: 2024/04/10 04:22 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki