Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


Differences

This shows you the differences between two versions of the page.

Link to this comparison view

Both sides previous revisionPrevious revision
bn:un:space-physics [2024/10/03 06:09] asadbn:un:space-physics [2024/10/03 06:19] (current) asad
Line 13: Line 13:
 অরোরা নিয়ে অনেক কুসংস্কার ও ভয় ছিল। ইউরোপে সতের শতকে এ নিয়ে প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রশ্নোত্তর শুরু হয়। **গ্যালিলিও** প্রস্তাব করেছিলেন, পৃথিবীর ছায়া থেকে উঠা বাতাসে সূর্যের আলো পড়লে অরোরা তৈরি হয়। উত্তরের অরোরা বুঝাতে 'অরোরা বোরিয়ালিস' শব্দটাও তার বানানো। ফ্রান্সের দার্শনিক-পাদ্রি পিয়ের গাসেঁদি বুঝতে পেরেছিলেন অরোরা পৃথিবীর সার্ফেস থেকে অনেক উপরের ঘটনা, কারণ অনেক দূরের দুই জায়গা থেকে একটা অরোরা দেখতে একই রকম লাগে। একই সময় দেকার্ত অরোরার জন্য দায়ী করেছিলেন উত্তর মেরুর কাছাকাছি এলাকার বরফ থেকে আলোর প্রতিফলনকে। সতের শতকের শেষ অর্ধেকে সূর্যের এক্টিভিটি আর অরোরা দুইটাই অনেক কমে গিয়েছিল, যা সেই সময় সোলার-টেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্সের উন্নতি না হওয়ার একটা কারণ হতে পারে। অরোরা নিয়ে অনেক কুসংস্কার ও ভয় ছিল। ইউরোপে সতের শতকে এ নিয়ে প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রশ্নোত্তর শুরু হয়। **গ্যালিলিও** প্রস্তাব করেছিলেন, পৃথিবীর ছায়া থেকে উঠা বাতাসে সূর্যের আলো পড়লে অরোরা তৈরি হয়। উত্তরের অরোরা বুঝাতে 'অরোরা বোরিয়ালিস' শব্দটাও তার বানানো। ফ্রান্সের দার্শনিক-পাদ্রি পিয়ের গাসেঁদি বুঝতে পেরেছিলেন অরোরা পৃথিবীর সার্ফেস থেকে অনেক উপরের ঘটনা, কারণ অনেক দূরের দুই জায়গা থেকে একটা অরোরা দেখতে একই রকম লাগে। একই সময় দেকার্ত অরোরার জন্য দায়ী করেছিলেন উত্তর মেরুর কাছাকাছি এলাকার বরফ থেকে আলোর প্রতিফলনকে। সতের শতকের শেষ অর্ধেকে সূর্যের এক্টিভিটি আর অরোরা দুইটাই অনেক কমে গিয়েছিল, যা সেই সময় সোলার-টেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্সের উন্নতি না হওয়ার একটা কারণ হতে পারে।
  
-আঠার শতকে এডমন্ড **হ্যালি** অরোরার সাথে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের দিকের একটা সম্পর্ক আছে বলে অনুমান করেছিলেন। কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফিলোসফার ডে মেরান হ্যালির সাথে দ্বিমত করে অরোরার সাথে সানস্পটের সংযোগ থাকার কথা বলেন। তখন থেকেই জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সাথে অরোরা গবেষণার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।+আঠার শতকে এডমন্ড **হ্যালি** অরোরার সাথে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের দিকের একটা সম্পর্ক আছে বলে অনুমান করেছিলেন। কিন্তু ফ্রেঞ্চ ফিলোসফার **ডে মেরান** হ্যালির সাথে দ্বিমত করে অরোরার সাথে সানস্পটের সংযোগ থাকার কথা বলেন। তখন থেকেই জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সাথে অরোরা গবেষণার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।
  
 জিওম্যাগ্নেটিজমের অস্তিত্ব নিয়ে প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় এগার শতকের এক চাইনিজ বইয়ে কম্পাস বিষয়ক আলোচনায়। বারো শতকে ইউরোপেও জিওম্যাগ্নেটিজম ও কম্পাস নিয়ে বই লেখা হয়েছে যাতে বলা আছে, মেঘলা দিনে নাবিকরা কম্পাস দিয়ে উত্তর দিক ঠিক করে। চৌদ্দ শতকের মধ্যে অনেক জাহাজেই নিয়মিত কম্পাস ইউজ করা হতো। জিওম্যাগ্নেটিজমের অস্তিত্ব নিয়ে প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় এগার শতকের এক চাইনিজ বইয়ে কম্পাস বিষয়ক আলোচনায়। বারো শতকে ইউরোপেও জিওম্যাগ্নেটিজম ও কম্পাস নিয়ে বই লেখা হয়েছে যাতে বলা আছে, মেঘলা দিনে নাবিকরা কম্পাস দিয়ে উত্তর দিক ঠিক করে। চৌদ্দ শতকের মধ্যে অনেক জাহাজেই নিয়মিত কম্পাস ইউজ করা হতো।
  
-পৃথিবীর একেক জায়গা থেকে চৌম্বক মেরু ও ভৌগলিক মেরুর দিকের মধ্যে পার্থক্য (যার নাম ডেক্লিনেশন) একেক রকম। এটা কখন প্রথম বুঝা গেছে আমরা নিশ্চিত জানি না। কিন্তু ষোল শতকে ইউরোপে লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, রোমের ডেক্লিনেশন ৬ ডিগ্রি আর জার্মানির নুরেম্বার্গের ডেক্লিনেশন ১০ ডিগ্রি। পর্তুগালের নাবিক জোয়াও দে কাস্ত্রো ১৫৩৮ থেকে ১৫৪১ সালের মধ্যে ভারতের পশ্চিম উপকূল আর লোহিত সাগরে ৪৩ জায়গার ডেক্লিনেশন মেপেছিলেন।+পৃথিবীর একেক জায়গা থেকে চৌম্বক মেরু ও ভৌগলিক মেরুর দিকের মধ্যে পার্থক্য (যার নাম **ডেক্লিনেশন**) একেক রকম। এটা কখন প্রথম বুঝা গেছে আমরা নিশ্চিত জানি না। কিন্তু ষোল শতকে ইউরোপে লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, রোমের ডেক্লিনেশন ৬ ডিগ্রি আর জার্মানির নুরেম্বার্গের ডেক্লিনেশন ১০ ডিগ্রি। পর্তুগালের নাবিক জোয়াও দে কাস্ত্রো ১৫৩৮ থেকে ১৫৪১ সালের মধ্যে ভারতের পশ্চিম উপকূল আর লোহিত সাগরে ৪৩ জায়গার ডেক্লিনেশন মেপেছিলেন।
  
 জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ড মাটির দিকে নুয়ে যায়, এই নতির পরিমাণকে বলে ইনক্লিনেশন। এটা মাপা যায় পিভটের উপর বসানো কম্পাস দিয়ে, যা সম্ভবত প্রথম বানানো হয়েছিল ষোল শতকের শেষের দিকে। জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ড মাটির দিকে নুয়ে যায়, এই নতির পরিমাণকে বলে ইনক্লিনেশন। এটা মাপা যায় পিভটের উপর বসানো কম্পাস দিয়ে, যা সম্ভবত প্রথম বানানো হয়েছিল ষোল শতকের শেষের দিকে।
Line 31: Line 31:
 উপরের ফিগারে দেখানো ১১ বছরের সোলার সাইকেল আবিষ্কার হয়েছে ১৮৫১ সালে। এই সাইকেলের সাথে সূর্যের ম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সম্পর্ক আছে। যেমন, ২০০৬-২০১০ এর মধ্যে হওয়া সোলার মিনিমামের সময় সূর্যের ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড অনেক দুর্বল ছিল। আঠার শতকে স্পেস ফিজিক্সের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ছিল এটা যে কম্পাস সব সময় নড়তে থাকে পরিবর্তনশীল চুম্বকক্ষেত্রের কারণে। সুইডেনে কম্পাস নিয়ে হাজার হাজার অব্জার্ভেশনের মাধ্যমে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের ডেইলি চেঞ্জ বুঝা গিয়েছিল। এই চেঞ্জের কারণ নিজের অক্ষে পৃথিবীর রোটেশন। উপরের ফিগারে দেখানো ১১ বছরের সোলার সাইকেল আবিষ্কার হয়েছে ১৮৫১ সালে। এই সাইকেলের সাথে সূর্যের ম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সম্পর্ক আছে। যেমন, ২০০৬-২০১০ এর মধ্যে হওয়া সোলার মিনিমামের সময় সূর্যের ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড অনেক দুর্বল ছিল। আঠার শতকে স্পেস ফিজিক্সের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ছিল এটা যে কম্পাস সব সময় নড়তে থাকে পরিবর্তনশীল চুম্বকক্ষেত্রের কারণে। সুইডেনে কম্পাস নিয়ে হাজার হাজার অব্জার্ভেশনের মাধ্যমে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের ডেইলি চেঞ্জ বুঝা গিয়েছিল। এই চেঞ্জের কারণ নিজের অক্ষে পৃথিবীর রোটেশন।
  
-আঠার শতকের মাঝামাঝি সময়ে সুইডেনেই অরোরার সাথে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সম্পর্ক আবিষ্কার হয়। আর এই শতকের শেষের দিকে প্রথমে জেমস কুক অরোরা অস্ট্রালিস (দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের অরোরা) দেখেন, আর তার বিশ বছর পর ইংল্যান্ডের হেনরি ক্যাভেন্ডিশ ত্রিকোণমিতি ইউজ করে অরোরার হাইট বের করেন ৮০ থেকে ১১৫ কিলোমিটার। ক্যাভেন্ডিশের হিসাব আগে করা হ্যালি ও ডে মেরানের চেয়ে অনেক নিখুঁত ছিল।+আঠার শতকের মাঝামাঝি সময়ে সুইডেনেই অরোরার সাথে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ডের সম্পর্ক আবিষ্কার হয়। আর এই শতকের শেষের দিকে প্রথমে জেমস কুক অরোরা অস্ট্রালিস (দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের অরোরা) দেখেন, আর তার বিশ বছর পর ইংল্যান্ডের হেনরি **ক্যাভেন্ডিশ** ত্রিকোণমিতি ইউজ করে অরোরার হাইট বের করেন ৮০ থেকে ১১৫ কিলোমিটার। ক্যাভেন্ডিশের হিসাব আগে করা হ্যালি ও ডে মেরানের চেয়ে অনেক নিখুঁত ছিল।
  
-উনিশ শতকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। একসাথে অনেক জায়গা থেকে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ড মাপা শুরু হয় ম্যাগ্নেটোমিটার দিয়ে। কালেক্ট করা সব ডেটার ভালো গাণিতিক বিশ্লেষণ করেছিলেন জার্মানির কার্ল গাউস। এর ফলে বুঝা গিয়েছিল ফিল্ডের কোন অংশটা মাটির নিচ থেকে আসে আর কোনটা এটমস্ফিয়ারে অনেক উপরে তৈরি হয় সূর্যের প্রভাবে।+উনিশ শতকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। একসাথে অনেক জায়গা থেকে জিওম্যাগ্নেটিক ফিল্ড মাপা শুরু হয় ম্যাগ্নেটোমিটার দিয়ে। কালেক্ট করা সব ডেটার ভালো গাণিতিক বিশ্লেষণ করেছিলেন জার্মানির কার্ল **গাউস**। এর ফলে বুঝা গিয়েছিল ফিল্ডের কোন অংশটা মাটির নিচ থেকে আসে আর কোনটা এটমস্ফিয়ারে অনেক উপরে তৈরি হয় সূর্যের প্রভাবে।
  
-এই শতকেরই মাঝামাঝি সময়ে জার্মানির হাইনরিখ শোয়াবে আবিষ্কার করেন যে সূর্যের সার্ফেসে সানস্পটের সংখ্যা আনুমানিক দশ বছরের একটা সাইকেলে উঠানামা করে, যাকে এখন আমরা সোলার সাইকেল বলি। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্রিটিশ কলোনিতে যখন ম্যাগ্নেটিক অব্জার্ভেটরি বসানো হয় তখন ইংলিশ এক বিজ্ঞানী বিভিন্ন মহাদেশের ডেটা এনালাইসিস করে বুঝতে পারেন যে পৃথিবীর জিওম্যাগ্নেটিক ডিস্টার্বেন্স সোলার সাইকেলের সাথেই উঠা-নামা করে।+এই শতকেরই মাঝামাঝি সময়ে জার্মানির হাইনরিখ **শোয়াবে** আবিষ্কার করেন যে সূর্যের সার্ফেসে সানস্পটের সংখ্যা আনুমানিক দশ বছরের একটা সাইকেলে উঠানামা করে, যাকে এখন আমরা সোলার সাইকেল বলি। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্রিটিশ কলোনিতে যখন ম্যাগ্নেটিক অব্জার্ভেটরি বসানো হয় তখন ইংলিশ এক বিজ্ঞানী বিভিন্ন মহাদেশের ডেটা এনালাইসিস করে বুঝতে পারেন যে পৃথিবীর জিওম্যাগ্নেটিক ডিস্টার্বেন্স সোলার সাইকেলের সাথেই উঠা-নামা করে।
  
-রিসেন্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্ময়কর একটা ঘটনা ঘটে ১৮৫৯ সালে। ইংল্যান্ডের এমেচার এস্ট্রোনমার রিচার্ড ক্যারিংটন সূর্যের সার্ফেসে সাদা-আলোর এক বিশাল ফ্লেয়ার (দাউদাউ আগুন) লক্ষ করেন, এবং একই সময় লন্ডনের এক ম্যাগ্নেটিক অব্জার্ভেটরি দেখতে পায় পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রে বড় ধরনের ডিস্টার্বেন্স। এখন আমরা জানি এর কারণ ছিল সূর্য থেকে আসা সোলার উইন্ড। পৃথিবীকে সূর্যের সাথে যুক্ত করা সুপারসনিক সোলার উইন্ড এসে তখন আমাদের আয়নোস্ফিয়ারের অনেক ইলেক্ট্রন খসিয়ে নিয়েছিল তাদের এটম থেকে, এর ফলে তড়িৎ-পরিবাহী আয়নোস্ফিয়ারে বেড়ে গিয়েছিল ইলেক্ট্রিক কারেন্ট, যার ফলে পৃথিবীতে হয়েছিল জিওম্যাগ্নেটিক ঝড়।+রিসেন্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বিস্ময়কর একটা ঘটনা ঘটে ১৮৫৯ সালে। ইংল্যান্ডের এমেচার এস্ট্রোনমার রিচার্ড ক্যারিংটন সূর্যের সার্ফেসে সাদা-আলোর এক বিশাল **ফ্লেয়ার** (দাউদাউ আগুন) লক্ষ করেন, এবং একই সময় লন্ডনের এক ম্যাগ্নেটিক অব্জার্ভেটরি দেখতে পায় পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রে বড় ধরনের ডিস্টার্বেন্স। এখন আমরা জানি এর কারণ ছিল সূর্য থেকে আসা সোলার উইন্ড। পৃথিবীকে সূর্যের সাথে যুক্ত করা সুপারসনিক সোলার উইন্ড এসে তখন আমাদের আয়নোস্ফিয়ারের অনেক ইলেক্ট্রন খসিয়ে নিয়েছিল তাদের এটম থেকে, এর ফলে তড়িৎ-পরিবাহী আয়নোস্ফিয়ারে বেড়ে গিয়েছিল ইলেক্ট্রিক কারেন্ট, যার ফলে পৃথিবীতে হয়েছিল জিওম্যাগ্নেটিক ঝড়।
  
 পৃথিবীতে প্রায় প্রতি বছর কোনো না কোনোখানে সূর্যের পূর্ণগ্রহণ হয়। গ্রহণের সময় সূর্যের বাইরের অংশ ও করোনা ভালো দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো টোটাল এক্লিপ্স টিকে থাকে মাত্র কয়েক মিনিট যা সূর্যের সার্ফেসের এক্টিভিটি বুঝার জন্য যথেষ্ট না। ক্যারিংটন আসলে যে করোনাল মাস ইজেকশন (সিএমই) দেখেছিলেন তা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে করোনাগ্রাফ উদ্ভাবনের পর। এই যন্ত্র দিয়ে সূর্যের সার্ফেস ঢেকে কৃত্রিম এক্লিপ্স তৈরি করে করোনা ভালোভাবে অব্জার্ভ করা যায়। পৃথিবীতে প্রায় প্রতি বছর কোনো না কোনোখানে সূর্যের পূর্ণগ্রহণ হয়। গ্রহণের সময় সূর্যের বাইরের অংশ ও করোনা ভালো দেখা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো টোটাল এক্লিপ্স টিকে থাকে মাত্র কয়েক মিনিট যা সূর্যের সার্ফেসের এক্টিভিটি বুঝার জন্য যথেষ্ট না। ক্যারিংটন আসলে যে করোনাল মাস ইজেকশন (সিএমই) দেখেছিলেন তা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে করোনাগ্রাফ উদ্ভাবনের পর। এই যন্ত্র দিয়ে সূর্যের সার্ফেস ঢেকে কৃত্রিম এক্লিপ্স তৈরি করে করোনা ভালোভাবে অব্জার্ভ করা যায়।
Line 43: Line 43:
 উনিশ শতকের আরেকটা ভালো আবিষ্কার ছিল আর্কটিক এক্সপ্লোরার জন ফ্রাংকলিনের। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন অরোরা একেবারে মেরু পর্যন্ত সমান হারে হয় না। এখন আমরা জানি অরোরা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় অরোরাল জোনে, আর এই জোন চুম্বকমেরু থেকে ২০-২৫ ডিগ্রি দূরে মেরুর চারদিক ঘেরা একটা ওভাল ব্যান্ড। একদম শেষের সাবসেকশনে জুপিটারের অরোরার এনিমেশনে এটা ভালোভাবে বুঝা যাবে। উনিশ শতকের আরেকটা ভালো আবিষ্কার ছিল আর্কটিক এক্সপ্লোরার জন ফ্রাংকলিনের। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন অরোরা একেবারে মেরু পর্যন্ত সমান হারে হয় না। এখন আমরা জানি অরোরা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় অরোরাল জোনে, আর এই জোন চুম্বকমেরু থেকে ২০-২৫ ডিগ্রি দূরে মেরুর চারদিক ঘেরা একটা ওভাল ব্যান্ড। একদম শেষের সাবসেকশনে জুপিটারের অরোরার এনিমেশনে এটা ভালোভাবে বুঝা যাবে।
  
-এই শতাব্দীর শেষ দশকে জে জে টমসন ইলেক্ট্রন আবিষ্কার করেন। নরওয়ের স্পেস ফিজিসিস্ট ক্রিস্টিয়ান বির্কলান্ড আগের বিজ্ঞানীদের কাজ ইউজ করে এবং টমসনের ইলেক্ট্রন দিয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে এই প্রস্তাব করেন: সূর্য থেকে আসা ইলেক্ট্রনের মতো পার্টিকেল পৃথিবীর ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড লাইন বরাবর ছোটার কারণেই অরোরা তৈরি হয়। লর্ড কেলভিন পৃথিবীর সাথে সূর্যের এই ধরনের কোনো কানেকশনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, সূর্য থেকে সশরীরে কোনো ইলেক্ট্রনের একেবারে পৃথিবী পর্যন্ত চলে আসা তার কাছে আজগুবি মনে হয়েছিল। কোল্ড ওয়ারের সময় মহাকাশে নভোযান পাঠানোর আগ পর্যন্ত বির্কলান্ডের কাজ যথেষ্ট গুরুত্ব পায়নি।+এই শতাব্দীর শেষ দশকে জে জে টমসন ইলেক্ট্রন আবিষ্কার করেন। নরওয়ের স্পেস ফিজিসিস্ট ক্রিস্টিয়ান **বির্কলান্ড** আগের বিজ্ঞানীদের কাজ ইউজ করে এবং টমসনের ইলেক্ট্রন দিয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে এই প্রস্তাব করেন: সূর্য থেকে আসা ইলেক্ট্রনের মতো পার্টিকেল পৃথিবীর ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড লাইন বরাবর ছোটার কারণেই অরোরা তৈরি হয়। লর্ড কেলভিন পৃথিবীর সাথে সূর্যের এই ধরনের কোনো কানেকশনের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, সূর্য থেকে সশরীরে কোনো ইলেক্ট্রনের একেবারে পৃথিবী পর্যন্ত চলে আসা তার কাছে আজগুবি মনে হয়েছিল। কোল্ড ওয়ারের সময় মহাকাশে নভোযান পাঠানোর আগ পর্যন্ত বির্কলান্ডের কাজ যথেষ্ট গুরুত্ব পায়নি।
  
 ==== - আয়নোস্ফিয়ার ==== ==== - আয়নোস্ফিয়ার ====
Line 55: Line 55:
 আয়নোস্ফিয়ারের একেক লেয়ারে ইলেক্ট্রনের ডেন্সিটি একেক রকম যা রিফ্লেক্টেড রেডিও সিগ্নালের মাধ্যমে মাপা যায়। এভাবেই ডি, ই, এফ নামে তিনটা অঞ্চল (রিজন) পাওয়া গেছে মোটামুটি ৬০, ৯০ ও ১১০ কিমি হাইট থেকে শুরু করে। ডি অঞ্চলে প্রতি সিসিতে কয়েক শ ইলেক্ট্রন পাওয়া যায়, ই অঞ্চলে কয়েক হাজার, এবং এফ অঞ্চলে কয়েক লাখ। আয়নোস্ফিয়ারের একেক লেয়ারে ইলেক্ট্রনের ডেন্সিটি একেক রকম যা রিফ্লেক্টেড রেডিও সিগ্নালের মাধ্যমে মাপা যায়। এভাবেই ডি, ই, এফ নামে তিনটা অঞ্চল (রিজন) পাওয়া গেছে মোটামুটি ৬০, ৯০ ও ১১০ কিমি হাইট থেকে শুরু করে। ডি অঞ্চলে প্রতি সিসিতে কয়েক শ ইলেক্ট্রন পাওয়া যায়, ই অঞ্চলে কয়েক হাজার, এবং এফ অঞ্চলে কয়েক লাখ।
  
-এর পাশাপাশি বিশ শতকে স্পেক্ট্রোস্কপির উন্নতি হওয়ায় অরোরার কালার বোঝার চেষ্টা চলতে থাকে। মাটির কাছাকাছি একটা অক্সিজেন মলিকুল এক্সাইটেড (উত্তেজিত) হলে কোনো রেডিয়েশন দেয়ার আগেই অন্য মলিকুলের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডি-এক্সাইটেড (প্রশমিত) হয়ে যায়, আলো দিতে পারে না। কিন্তু দুইশ কিমি হাইটে অণু পরমাণু এত কম যে উত্তেজিত এটম তার উত্তেজনা প্রশমনের জন্য অন্য কোনো এটম পাওয়ার আগেই রেডিয়েট করতে শুরু করে নির্দিষ্ট কোনো কম্পাঙ্কে, নির্দিষ্ট কোনো রঙে। এজন্যই অরোরার এত রং। মাটি থেকে একশ কিমির নিচের অরোরায় নাইট্রোজেনের লাল নীল আলো বেশি, একশ থেকে আড়াইশ কিমির মধ্যে অক্সিজেনের সবুজ সবচেয়ে বেশি, আর ২৫০ কিমি'র উপরে অক্সিজেনের লাল রেখা বেশি। অরোরা মূলত ইলেক্ট্রনের কারণে হয়, কিন্তু ১৯৩৯ সালে প্রথম প্রোটন অরোরাও পাওয়া যায়।+এর পাশাপাশি বিশ শতকে স্পেক্ট্রোস্কপির উন্নতি হওয়ায় **অরোরার কালার** বোঝার চেষ্টা চলতে থাকে। মাটির কাছাকাছি একটা অক্সিজেন মলিকুল এক্সাইটেড (উত্তেজিত) হলে কোনো রেডিয়েশন দেয়ার আগেই অন্য মলিকুলের সাথে ধাক্কা খেয়ে ডি-এক্সাইটেড (প্রশমিত) হয়ে যায়, আলো দিতে পারে না। কিন্তু দুইশ কিমি হাইটে অণু পরমাণু এত কম যে উত্তেজিত এটম তার উত্তেজনা প্রশমনের জন্য অন্য কোনো এটম পাওয়ার আগেই রেডিয়েট করতে শুরু করে নির্দিষ্ট কোনো কম্পাঙ্কে, নির্দিষ্ট কোনো রঙে। এজন্যই অরোরার এত রং। মাটি থেকে একশ কিমির নিচের অরোরায় নাইট্রোজেনের লাল নীল আলো বেশি, একশ থেকে আড়াইশ কিমির মধ্যে অক্সিজেনের সবুজ সবচেয়ে বেশি, আর ২৫০ কিমি'র উপরে অক্সিজেনের লাল রেখা বেশি। অরোরা মূলত ইলেক্ট্রনের কারণে হয়, কিন্তু ১৯৩৯ সালে প্রথম প্রোটন অরোরাও পাওয়া যায়।
  
 উনিশ শতকের আশির দশকে 'হুইসলার' নামে পরিচিত এক ধরনের অডিও তরঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল অস্ট্রিয়ার টেলিফোন লাইনে। হুইসলার হুট করে আসা রেডিও নয়েজ যার পিচ কমতে কমতে এক সময় হারিয়ে যায়। ১৯১৪ থেকে শুরু হওয়া একত্রিশ বছরের যুদ্ধে এক দেশ আরেক দেশের টেলিফোন লাইনে আড়ি পাততে গিয়ে হুইসলারের নয়েজও অনেক শুনেছিল। কিন্তু বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে প্রথম বুঝা যায়, এর উৎস আসলে লাইটনিং। বজ্রের তড়িচ্চুম্বক এনার্জি আয়নোস্ফিয়ারের উপরের ভাগের ম্যাগ্নেটিফ ফিল্ড লাইনে আটকা পড়ে এপাশ থেকে ওপাশে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে, এভাবেই তৈরি হয় হুইসলার। হুইসলার নিয়ে গবেষণা করে বুঝা গেছে আয়নোস্ফিয়ারের একেবারে উপরের অংশে ইলেক্ট্রনের ডেন্সিটি অনেক বেশি, এই অংশের নাম এখন প্লাজমাস্ফিয়ার, কেউ অবশ্য ইনার ম্যাগ্নেটোস্ফিয়ারও বলে। উনিশ শতকের আশির দশকে 'হুইসলার' নামে পরিচিত এক ধরনের অডিও তরঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল অস্ট্রিয়ার টেলিফোন লাইনে। হুইসলার হুট করে আসা রেডিও নয়েজ যার পিচ কমতে কমতে এক সময় হারিয়ে যায়। ১৯১৪ থেকে শুরু হওয়া একত্রিশ বছরের যুদ্ধে এক দেশ আরেক দেশের টেলিফোন লাইনে আড়ি পাততে গিয়ে হুইসলারের নয়েজও অনেক শুনেছিল। কিন্তু বিশ শতকের পঞ্চাশের দশকে প্রথম বুঝা যায়, এর উৎস আসলে লাইটনিং। বজ্রের তড়িচ্চুম্বক এনার্জি আয়নোস্ফিয়ারের উপরের ভাগের ম্যাগ্নেটিফ ফিল্ড লাইনে আটকা পড়ে এপাশ থেকে ওপাশে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে, এভাবেই তৈরি হয় হুইসলার। হুইসলার নিয়ে গবেষণা করে বুঝা গেছে আয়নোস্ফিয়ারের একেবারে উপরের অংশে ইলেক্ট্রনের ডেন্সিটি অনেক বেশি, এই অংশের নাম এখন প্লাজমাস্ফিয়ার, কেউ অবশ্য ইনার ম্যাগ্নেটোস্ফিয়ারও বলে।
bn/un/space-physics.1727957394.txt.gz · Last modified: 2024/10/03 06:09 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki