Abekta

Nothing human is alien to me

User Tools

Site Tools


Differences

This shows you the differences between two versions of the page.

Link to this comparison view

Both sides previous revisionPrevious revision
Next revision
Previous revision
bn:courses:ast100:3 [2024/11/20 13:16] – [4. তারার জীবন] asadbn:courses:ast100:3 [2024/11/23 00:35] (current) asad
Line 1: Line 1:
-====== ৩. স্টেলার যুগ ======+====== ৩. ারা যুগ ======
  
 **সক্রেটিস:** গ্যালাক্টিক যুগে আমরা দুইটা ব্যাপার বুঝার সময় পাইনি। প্রথমত, গ্যালাক্সি কিভাবে এলিপ্টিকেল থেকে লেন্টিকুলার হয়, মানে একটা গোল জিনিস কিভাবে ফ্ল্যাট হয়। দ্বিতীয়ত, গ্যালাক্সির ডিস্কের মধ্যে কিভাবে স্পাইরাল আর্মের জন্ম হয়। স্টেলার যুগেই যেহেতু এসব ঘটনা ঘটেছে সেহেতু আশাকরি যুদ্ধের দেবতা মার্স এই দুই ব্যাপার পরিষ্কার করে আমাদেরকে শান্তি দিবে। **সক্রেটিস:** গ্যালাক্টিক যুগে আমরা দুইটা ব্যাপার বুঝার সময় পাইনি। প্রথমত, গ্যালাক্সি কিভাবে এলিপ্টিকেল থেকে লেন্টিকুলার হয়, মানে একটা গোল জিনিস কিভাবে ফ্ল্যাট হয়। দ্বিতীয়ত, গ্যালাক্সির ডিস্কের মধ্যে কিভাবে স্পাইরাল আর্মের জন্ম হয়। স্টেলার যুগেই যেহেতু এসব ঘটনা ঘটেছে সেহেতু আশাকরি যুদ্ধের দেবতা মার্স এই দুই ব্যাপার পরিষ্কার করে আমাদেরকে শান্তি দিবে।
Line 72: Line 72:
 **জুনো:** আগে ছিল রূপহীন মেঘ, এখন দেখি মাঝখানে লাল-লাল একটা গোলক, আর তার চারদিকে আধা লাইট-ইয়ার সাইজের একটা ফ্ল্যাট ডিস্ক। নিরাকার মেঘ থেকে গোল কোর আর ফ্ল্যাট ডিস্ক কিভাবে তৈরি হলো এই কয়েক মিলিয়ন বছরে? **জুনো:** আগে ছিল রূপহীন মেঘ, এখন দেখি মাঝখানে লাল-লাল একটা গোলক, আর তার চারদিকে আধা লাইট-ইয়ার সাইজের একটা ফ্ল্যাট ডিস্ক। নিরাকার মেঘ থেকে গোল কোর আর ফ্ল্যাট ডিস্ক কিভাবে তৈরি হলো এই কয়েক মিলিয়ন বছরে?
  
-**মার্স:** এটা বুঝতে হলে গ্র্যাভিটি ও রোটেশনের পার্থক্যটা বুঝতে হবে। আমি যদি এই পাথরের উপর থেকে আংসির তুখোড় স্রোতে লাফ দেই, এখন আমার কিছুই হবে না, কিন্তু বেঁচে থাকলে মারা যেতাম। কারণ গ্র্যাভিটি আমাকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে টানছে। কোনো এস্ট্রোনট পৃথিবীর যত কাছে আসে পৃথিবীর গ্র্যাভিটি তাকে তত জোরে টানে। তার মানে গ্র্যাভিটি সব সময় আকর্ষণ করে, এবং গ্র্যাভিটির কেন্দ্রের যত কাছে যাব গ্র্যাভিটি ততই বাড়বে।+**মার্স:** এটা বুঝতে হলে গ্র্যাভিটি ও রোটেশনের পার্থক্যটা বুঝতে হবে। আমি যদি এই পাথরের উপর থেকে সিয়াং নদীর তুখোড় স্রোতে লাফ দেই, এখন আমার কিছুই হবে না, কিন্তু বেঁচে থাকলে মারা যেতাম। কারণ গ্র্যাভিটি আমাকে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে টানছে। কোনো এস্ট্রোনট পৃথিবীর যত কাছে আসে পৃথিবীর গ্র্যাভিটি তাকে তত জোরে টানে। তার মানে গ্র্যাভিটি সব সময় আকর্ষণ করে, এবং গ্র্যাভিটির কেন্দ্রের যত কাছে যাব গ্র্যাভিটি ততই বাড়বে।
  
 **জুনো:** এখন রোটেশন বুঝানোর জন্যই কি দড়ির এক প্রান্তে পাথরের টুকরা বাঁধলে? **জুনো:** এখন রোটেশন বুঝানোর জন্যই কি দড়ির এক প্রান্তে পাথরের টুকরা বাঁধলে?
Line 197: Line 197:
 **মার্স:** ঐ যে ঐ দিকে তাকাও, এখনো দেখা যাচ্ছে। তোমার চার্টে দেখো ওখানে ঐ তারাটা এখন থাকার কথা কি না। **মার্স:** ঐ যে ঐ দিকে তাকাও, এখনো দেখা যাচ্ছে। তোমার চার্টে দেখো ওখানে ঐ তারাটা এখন থাকার কথা কি না।
  
-**কেপলার:** অসাধারণ। আসলেই নতুন তারা। এটা এখানে থাকার কথা না। গতকাল রাত থেকে দেখা যাচ্ছে। এরিস্টটল বলেছিল কাশে নতুন কিছু ঘটে না। তিনি ভুল প্রমাণিত হলেন। আমার কাজ এখন কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব প্রমাণ করে এরিস্টটলকে কবর দেয়ার কাজটা ঠিকভাবে শেষ করা।+**কেপলার:** অসাধারণ। আসলেই নতুন তারা। এটা এখানে থাকার কথা না। গতকাল রাত থেকে দেখা যাচ্ছে। এরিস্টটল বলেছিলেন মহাকাশে নতুন কিছু ঘটে না। তিনি ভুল প্রমাণিত হলেন। আমার কাজ এখন কোপার্নিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব প্রমাণ করে এরিস্টটলকে কবর দেয়ার কাজটা ঠিকভাবে শেষ করা।
  
 **মার্স:** এই নতুন তারাও যে এক ধরনের কবর, জানো? **মার্স:** এই নতুন তারাও যে এক ধরনের কবর, জানো?
Line 205: Line 205:
 **মার্স:** আমি কে সেটা জানার দরকার নাই। আগে বলো প্লেটোর টিমেয়াসের মতো আমি যদি এই 'নতুন' তারা নিয়ে একটা সম্ভাব্য গল্প বলতে পারি তাহলে মন দিয়ে শুনবে? **মার্স:** আমি কে সেটা জানার দরকার নাই। আগে বলো প্লেটোর টিমেয়াসের মতো আমি যদি এই 'নতুন' তারা নিয়ে একটা সম্ভাব্য গল্প বলতে পারি তাহলে মন দিয়ে শুনবে?
  
-**কেপলার:** আমি 'সমনিয়াম' নামে একটা গল্প নিজেই লেখার চিন্তা করছি, গল্পের প্রতি আমার বিতৃষ্ণা নাই।+**কেপলার:** আমি 'সমনিয়াম' নামে একটা গল্প নিজেই লেখার চিন্তা করছি, গল্পের প্রতি আমার বিতৃষ্ণা নাই।
  
 ==== - হোয়াইট ডোয়ার্ফ ==== ==== - হোয়াইট ডোয়ার্ফ ====
Line 230: Line 230:
 **সক্রেটিস:** আচ্ছা এখন বাকি দুই লাশের কথা বলো। **সক্রেটিস:** আচ্ছা এখন বাকি দুই লাশের কথা বলো।
 ==== - নিউট্রন স্টার ==== ==== - নিউট্রন স্টার ====
 +**মার্স:** কোনো তারার কোরের ভর যদি সূর্যের দেড় গুণের কম হয় তাহলে তা মৃত্যুর পর হোয়াইট ডোয়ার্ফ হবে, কিন্তু যদি দেড় গুণের বেশি হয় তাহলে হবে নিউট্রন স্টার। একটা তারার মোট ভর সূর্যের আট গুণ বা তার চেয়ে বেশি হলেই কেবল মৃত্যুর সময় তার কোরের ভর দেড় গুণের মতো হতে পারে। এই কারণে সূর্যের চেয়ে অন্তত আট গুণ ভারী তারাদের মৃতদেহই শুধু নিউট্রন স্টার হতে পারে।
  
-{{:bn:courses:ast100:neutron-star.webp?nolink|}}+**সক্রেটিস:** আগেও এই 'দেড়' গুণের কথা বলেছ। লিমিটটা সূর্যের ঠিক 'দেড়' গুণই কেন? 
 + 
 +**মার্স:** সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর ('চন্দ্র এক্স-রে অব্জার্ভেটরি'র নেমসেক) ১৯৩০ সালে কেম্ব্রিজ ইউনিতে যাওয়ার পথে মুম্বাই-টু-ভেনিসের এক জাহাজে বসে এই বিখ্যাত লিমিট আবিষ্কার করেছিলেন। ম্যাথ ছাড়া সব হয় মিথ নয় মিথ্যা, তবু ম্যাথ ছাড়াই 'চন্দ্রশেখর লিমিট' বুঝানোর চেষ্টা করছি, যার আসল মান ১.৪৪, মানে দেড়ের খুব কাছাকাছি। তারা মূলত হাইড্রোজেন (৭৪%) ও হিলিয়াম (২৪%) গ্যাস দিয়ে তৈরি। কিন্তু তারার ভিতরে তাপমাত্রা এত বেশি যে সব এটম থেকে ইলেক্ট্রন খসে যায়। ইলেক্ট্রনবিহীন এটমকে আয়ন বলে। স্বাধীন আয়ন ও ইলেক্ট্রনের গ্যাসকে বলে প্লাজমা। তাই তারাকে গ্যাসের বল না বলে প্লাজমার বল বলা উচিত। আর হাইড্রোজেন এটম যেহেতু শুধু একটা প্রোটন ও একটা ইলেক্ট্রন দিয়ে তৈরি, সেহেতু তারার প্লাজমা আসলে স্বাধীন প্রোটন ও ইলেক্ট্রনের গ্যাস, মানে তার মধ্যে আয়ন বলতে আছে শুধু বিচ্ছিন্ন প্রোটন। রেড জায়ান্ট ধাপ পার হওয়ার পরে তারার কোর যখন অনেক ছোট ও ঘন হয়ে যায়, তখন সব ইলেক্ট্রন ডিজেনারেট হয়ে গ্র্যাভিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, যার ফলে তৈরি হয় স্টেবল হোয়াইট ডোয়ার্ফ। কিন্তু চন্দ্রশেখর সেই জাহাজে বসে হিসাব করে দেখেছিলেন, কোরের ভর যদি সূর্যের দেড় গুণের বেশি হয়, তাহলে গ্র্যাভিটি এত শক্তিশালী হয়ে পড়ে যে ইলেক্ট্রনের ডিজেনারেসি প্রেসার আর গ্র্যাভিটিকে ঠেকাতে পারে না। ফলে তারা আরো ছোট ও ঘন হতে থাকে। আগে শুধু ইলেক্ট্রন চাপাচাপি করছিল, এইবার সব এটমের নিউক্লিয়াস ভেঙে যায়, এবং প্রোটন নিউট্রনে রূপান্তরিত হয়। এই সব নিউট্রনের অবস্থান ও বেগ (হোয়াইট ডোয়ার্ফের ইলেক্ট্রনের মতোই) অনেক অস্বাভাবিক হয়ে যায়, মানে তারা বেশি কাছাকাছি চলে আসে এবং তাদের বেগ অস্বাভাবিক রকমের বেড়ে যায়। এর ফলে এবার নিউট্রনের ডিজেনারেসি প্রেসার তৈরি হয় যা গ্র্যাভিটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তারাকে আরো সংকুচিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। নিউট্রন ডিজেনারেসি দিয়ে তৈরি এসব তারার নামই নিউট্রন স্টার। 
 + 
 +**সক্রেটিস:** তা নিউট্রন স্টারের সাইজ কেমন হয়? নিশ্চয়ই খুব ছোট? 
 + 
 +**মার্স:** হ্যাঁ। সূর্যের সমান একটা তারাকে (ব্যাস ১ মিলিয়ন কিমি) ছোট করে যদি প্রায় পৃথিবীর সমান (১০ হাজার কিমি) বানিয়ে ফেলি তাহলে পাওয়া যাবে হোয়াইট ডোয়ার্ফ, আর যদি আরো ছোট করে ঢাকা শহরের সমান (১০ কিমি) বানিয়ে ফেলি তাহলে হবে নিউট্রন স্টার। ভর যেহেতু কমাইনি সেহেতু ডেন্সিটি অনেক বেড়েছে। সূর্যের ভিতরে গ্যাসের ঘনত্ব প্রতি কিউবিক সেন্টিমিটারে (সিসি) মাত্র ১ গ্রাম, হোয়াইট ডোয়ার্ফে ১ মিলিয়ন গ্রাম, আর নিউট্রন স্টারে প্রায় ১০০০ ট্রিলিয়ন গ্রাম। এক চা-চামচে মোটামুটি এক সিসি পদার্থ উঠানো যায়। তার মানে নিউট্রন স্টারের এক চা-চামচ পদার্থের ভর ১ ট্রিলিয়ন কেজি। এবং নিউট্রন স্টারের চেয়ে গোল জিনিস মহাবিশ্বে আর কিছু সহজে পাওয়া যাবে না। 
 + 
 +**সক্রেটিস:** কেন? সূর্যও তো গোল। 
 + 
 +**মার্স:** সূর্যও গোল। পৃথিবীও গোল। কিন্তু কতটা গোল? একটু আগেই যেমন বললাম, রোটেশনের কারণে কেউ পুরাপুরি গোল থাকতে পারে না। পৃথিবী ২৪ ঘণ্টায় একবার ঘুরে বলে মেরু (রোটেশনের এক্সিস) বরাবর একটু চ্যাপ্টা। পৃথিবীর ইকুয়েটরিয়াল ও পোলার ব্যাসের মধ্যে পার্থক্য ০.৩%, আর সূর্যের ক্ষেত্রে এই পার্থক্য ০.০০০৯%, মানে সূর্য ৯৯.৯৯৯% পারফেক্ট গোলক। নিউট্রন স্টারও সূর্যের সমান গোল। 
 + 
 +**সক্রেটিস:** এখন কিন্তু আমার মনে হচ্ছে নিউট্রন স্টার সূর্যের চেয়েও বেশি গোল হওয়া উচিত। কারণ সূর্যের চেয়ে নিউট্রন স্টারের ঘনত্ব অনেক বেশি, তার মানে সেলফ-গ্র্যাভিটিও অনেক বেশি। 
 + 
 +**মার্স:** তুমি আজকে ফর্মে আছ মনে হচ্ছে, সক্রেটিস। হ্যাঁ গ্র্যাভিটি আসলেই অনেক বেশি। ওজন দিয়ে ব্যাপারটা বুঝানো যায়। পৃথিবীর সার্ফেসে ১০০ কেজি ভরের একজন মানুষের ওজন হবে ১ হাজার নিউটন, সূর্যের সার্ফেসে হবে ৩০ হাজার নিউটন, কিন্তু একটা নিউট্রন স্টারের সার্ফেসে তার ওজন হবে ১০০০ ট্রিলিয়ন নিউটন। ভরকে সার্ফেস গ্র্যাভিটি দিয়ে গুণ করলেই ওজন পাওয়া যায়। গ্র্যাভিটি এত বেশি হওয়া সত্ত্বেও নিউট্রন স্টার সূর্যের সমান গোল, কারণ নিউট্রন স্টার ঘুরেও অনেক জোরে। এমন নিউট্রন স্টারও পাওয়া গেছে যারা এক সেকেন্ডে এক হাজার বার ঘুরে। এসব রোটেটিং নিউট্রন স্টারের আশপাশে যদি অন্য তারা বা গ্যাস থাকে তাহলে নিউট্রন স্টারের চারদিকে একটা এক্রিশন ডিস্ক তৈরি হয় এবং প্রোটোস্টার বা এক্টিভ গ্যালাক্সির মতোই ডিস্ক থেকে তার ভিতরে পদার্থ ঢুকতে থাকে। অনেক বেগে ঘোরার কারণে তখন কিছু পদার্থ দুই মেরু দিয়ে জেট হিসেবে বের হয়। এমন জেট থাকলে নিউট্রন স্টারটাকে বলা হয় পালসার। 
 + 
 +**সক্রেটিস:** পালসের সাথে কোনো সম্পর্ক আছে না কি?
  
 {{https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/4/4d/Lightsmall-optimised.gif?nolink&500}} {{https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/4/4d/Lightsmall-optimised.gif?nolink&500}}
  
 +**মার্স:** হ্যাঁ। এই ছবিতে যেমন দেখতে পাচ্ছ। পালসারের জেট যেহেতু একটা চিকন বিমের মধ্য দিয়ে যায়, সেহেতু আমরা কেবল তখনি জেটটা দেখতে পারি যখন তা সরাসরি আমাদের দিকে আসে। জেট আমাদের দিকে আসামাত্রই টেলিস্কোপে উচ্চ এনার্জির পালস পাওয়া যায়। এক সেকেন্ডে হাজার বার যারা ঘোরে তাদের কাছ থেকে আমরা এক সেকেন্ডে এক হাজার পালস পাই। প্রথম পালসার আবিষ্কার করেছিলেন কেম্ব্রিজে জসলিন বেল বার্নেল ১৯৬৭ সালে। এত নিখুঁত পালস দেখে অনেকে তখন এটাকে এলিয়েন সভ্যতার সিগ্নাল ভেবে ভুল করেছিল।
 +
 +**সক্রেটিস:** এলিয়েন যে আসলেই আছে মানুষ মনে হয় সেটা জীবনেও বুঝবে না। যাই হোক, এখন ব্ল্যাক হোলের কথা বলো। আরো কত বড় তারা আর কত ঘন কোর লাগবে ব্ল্যাক হোল বানানোর জন্য?
 ==== - ব্ল্যাক হোল ==== ==== - ব্ল্যাক হোল ====
 +**মার্স:** ব্ল্যাক হোল কিভাবে হয় এখন তো বুঝতেই পারছ। তারার জীবনের মূল সমস্যা হলো গ্র্যাভিটির নিরন্তর কেন্দ্রমুখিতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজেকে টিকিয়ে রাখা। সূর্য সেটা করে নিউক্লিয়ার প্রেসার ও গরম গ্যাসের প্রেসারের মাধ্যমে, হোয়াইট ডোয়ার্ফ করে ডিজেনারেট ইলেক্ট্রনের প্রেসার দিয়ে, আর নিউট্রন স্টার করে নিউট্রনের ডিজেনারেসি প্রেসার দিয়ে। কিন্তু শুরুতে একটা তারার ভর যদি সূর্যের ২০ গুণ বা আরো বেশি হয়, তাহলে মৃত্যুর সময় তার কোর সূর্যের দেড় গুণ না বরং অন্তত তিন গুণ ভারী হবে। এক্ষেত্রে নিউট্রনের দলও গ্র্যাভিটির কেন্দ্রমুখী চাপ আর ঠেকাতে পারবে না। কোরের বাইরের অংশ কলাপ্স করে ভিতরের অংশ থেকে যখন বাউন্স করবে তখন ভয়ানক শক্তিশালী সুপারনোভা বিস্ফোরণ হবে, যার নাম হাইপারনোভা। হাইপারনোভা বিস্ফোরণের পর কোরের একদম ভিতরের অংশটা গ্র্যাভিটির কারণে সংকুচিত হয়ে একটা প্রায়-শূন্য বিন্দু হয়ে যাবে, যেখানে ঘনত্ব অসীম।
  
-{{:bn:courses:ast100:black-hole.webp?nolink|}}+**সক্রেটিস:** কিন্তু ব্ল্যাকহোল মানে তো একটা বিন্দু না। ব্ল্যাকহোলেরও তো সাইজ আছে।
  
 {{:bn:courses:ast100:black-hole-anatomy.webp?nolink|}} {{:bn:courses:ast100:black-hole-anatomy.webp?nolink|}}
  
 +**মার্স:** হ্যাঁ, আছে। এই ছবিতে একটা ব্ল্যাক হোলের মানচিত্র দেখতে পাচ্ছ। অন্তত ব্ল্যাকহোলের আশপাশের মানচিত্র। তার ভিতরের কিছু দেখানো সম্ভব না কারণ ভিতর থেকে এমনকি আলোও বের হতে পারে না।
 +
 +**সক্রেটিস:** আলো বের হতে পারে না কি গ্র্যাভিটির জন্য?
 +
 +**মার্স:** হ্যাঁ। যার সার্ফেস গ্র্যাভিটি যত বেশি তার গ্র্যাভিটি থেকে বের হওয়া তত কঠিন। পৃথিবীর মহাকর্ষ থেকে পালাতে হলে এক সেকেন্ডে যেতে হয় ১১ কিমি দূরে, সূর্য থেকে পালাতে হলে যেতে হয় ৬০০ কিমি, হোয়াইট ডোয়ার্ফ থেকে ৫ হাজার কিমি, নিউট্রন স্টার থেকে ১ লাখ কিমি দূরে। আলোর বেগ সেকেন্ডে ৩ লাখ কিমি, সুতরাং নিউট্রন স্টার থেকে বের হওয়ার সময় আলোও হিমশিম খায়, গ্র্যাভিটির টানে লম্বা হয়ে যায়। আর ব্ল্যাক হোল এমন জিনিস যার থেকে পালাতে হলে আলোর চেয়েও বেশি বেগ লাগে। আলো নিজেও পালাতে পারে না বলেই এদের নাম ব্ল্যাক হোল। সব এনার্জি-ম্যাটার কেন্দ্রের সিঙ্গুলারিটিতে থাকলেও ইভেন্ট হরাইজন পর্যন্ত ব্ল্যাক হোলের গ্র্যাভিটির প্রভাব থাকে, ইভেন্ট হরাইজনের ভিতরে ঢুকে গেলে আর বের হওয়া সম্ভব না। কারো পক্ষেই সম্ভব না। কারণ আলোর চেয়ে বেশি তো দূরের কথা, আলোর সমান বেগও কারো থাকতে পারে না। ইনারমোস্ট স্টেবল অর্বিটের চেয়ে কাছে যদি কিছু চলে যায় তাহলেই তার পক্ষে আর ফিরে আসা সম্ভব না, ইভেন্ট হরাইজনে ঢুকে পড়াই তার একমাত্র ভাগ্য। এর ঠিক বাইরে আলো গ্র্যাভিটির কারণে এত বেঁকে যায় যে স্যাটেলাইটের মতো ব্ল্যাক হোলের চারদিকে ঘুরতে থাকে; এর ফলে একটা গোলাকার ফোটন স্ফিয়ার তৈরি হয়। এবং প্রোটোস্টার ও পালসারের মতোই ব্ল্যাক হোলের ভিতরে গ্যাস ঢুকে একটা সমতল এক্রিশন ডিস্ক থেকে। কিছু পদার্থ চিরতরে হারিয়ে যায়, আর রোটেশনের কারণে কিছু পদার্থ ব্ল্যাক হোলের দুই মেরু দিয়ে জেট হিসেবে বের হয় প্রায় আলোর সমান বেগে।
 +
 +**সক্রেটিস:** আচ্ছা, এরকম অসংখ্য ব্ল্যাক হোলের সমন্বিত রূপই আমরা দেখেছিলাম গ্যালাক্টিক যুগে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল হিসেবে। কিন্তু সিঙ্গুলারিটিতে হারানো চলবে না এত তাড়াতাড়ি, ব্রহ্মপুত্র ডাকছে। পুরা মহাবিশ্ব পেরিয়ে আমাদের এখন যেতে হবে পৃথিবীতে, পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে।
bn/courses/ast100/3.1732133784.txt.gz · Last modified: 2024/11/20 13:16 by asad

Donate Powered by PHP Valid HTML5 Valid CSS Driven by DokuWiki