এস্ট্রোনমারদের সবচেয়ে বড় চিন্তার একটা হলো ছবির রেজলুশন, অর্থাৎ একটা ছবিতে পাশাপাশি দুটি বিন্দুকে কত ভালোভাবে আলাদা করা যায়। রেজলুশন কম হলে ছবি ঝাপসা হয়, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জিনিস আলাদাভাবে চেনা যায় না। রেজলুশন বেশি হলে ছবি শার্প হয়, অনেক জুম করলেও অনেক ছোট স্ট্রাকচার দেখা যায়। টেলিস্কোপ ডিজাইনের একটা মৌলিক সূত্র বলে যেকোনো টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা ছবির রেজলুশন
$$ \theta \approx \frac{\lambda}{D} $$
যেখানে $\lambda$ হলো ডিটেক্ট করা তরঙ্গের ওয়েভলেন্থ এবং $D$ হলো টেলিস্কোপের ডায়ামেটার। সুতরাং টেলিস্কোপ যত বড় হবে থিটার মান তত কম হবে, মানে রেজলুশন তত ভালো হবে। আবার ওয়েভলেন্থ যত বেশি হবে একই সাইজের টেলিস্কোপের ক্ষেত্রে রেজলুশন তত খারাপ হবে। রেডিও এস্ট্রোনমাররা যেহেতু সবচেয়ে লম্বা ওয়েভ নিয়ে কাজ করেন সেহেতু রেজলুশনের সমস্যা সবচেয়ে বেশি তাদেরই।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারা এক ক্লেভার সিস্টেম বের করেছেন। ওয়েভলেন্থ যেহেতু অনেক বেশি, সেহেতু টেলিস্কোপের ডায়ামেটারও যদি অনেক বাড়ানো যায় তাহলে রেজলুশন খুব একটা খারাপ হবে না। কিন্তু একটা সিঙ্গেল রেডিও ডিশ খুব বেশি বড় করা যায় না। এর বদলে তারা অনেকগুলো ডিশ দিয়ে একসাথে একটা অব্জেক্ট অব্জার্ভ করে একটা সিঙ্গেল ছবি তৈরি করেন, এবং এই ছবির রেজলুশন হয় টেলিস্কোপগুলোর মধ্যে দূরত্বের ব্যস্তানুপাতিক। মানে এক্ষেত্রে $D$ আর একটা সিঙ্গেল ডিশের ডায়ামেটার থাকে না, বরং হয়ে যায় টেলিস্কোপগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দূরত্ব যার আরেক নাম বেজলাইন। বেজলাইন যত বেশি থিটা তত কম, রেজলুশন তত ভালো।
এখান থেকেই এসেছে ‘ভেরি লং বেজলাইন’-এর ধারণা। আর এটাকে ইন্টারফেরোমেট্রি বলা হচ্ছে কারণ একাধিক টেলিস্কোপ দিয়ে একসাথে একটা সিঙ্গেল ছবি তৈরি করার প্রক্রিয়ার নাম ইন্টারফেরোমেট্রি; এক্ষেত্রে একাধিক তরঙ্গের মধ্যে ইন্টারফেয়ারেন্স করানো হয়। ভেরি-লং-বেজলাইন ইন্টারফেরোমেট্রি বা ভিএলবিআই-এর একেকটা টেলিস্কোপ একেক মহাদেশে, তাই বেজলাইন অনেক লম্বা। এত বড় বেজলাইন ছিল বলেই ভিএলবিআই নেটওয়ার্কের ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ দিয়ে প্রথমবারের মতো একটা ব্ল্যাকহোলের ইভেন্ট হরাইজনের ছবি তোলা সম্ভব হয়েছিল ২০১৯ সালে।