আর্টের সংজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা চলছে গত আড়াই হাজার বছর ধরে। আর্ট প্লেটোর মতে অনুকরণ, টলস্টয়ের মতে অনুভূতির বাহন, ক্লাইভ বেলের মতে অর্থপূর্ণ রূপ (১৯১৪), বেনেদেত্তো ক্রোচে’র মতে ইন্টুইশনের প্রকাশ (১৯২০)। কিন্তু কোনো সংজ্ঞাই শিল্পের বৈচিত্র্য ধরতে পারে না। বিশ শতকের ষাটের দশক থেকে শিল্পের সংজ্ঞা প্রধানত দুইভাবে দেয়া হচ্ছে, ফাংশন দিয়ে বা ফর্মুলা দিয়ে। কেউ বলে কোনকিছু আর্ট হয় যদি সমাজে তার নির্দিষ্ট কিছু ফাংশন থাকে, কেউ বলে তাই আর্ট যা নির্দিষ্ট কিছু ফর্মুলা মেনে বানানো হয়। ফাংশনভিত্তিক সংজ্ঞা একটা এমন হতে পারে: আর্ট কিছু ননেস্থেটিক জিনিসের এমন বিন্যাস যা মূল্যবান এস্থেটিক অভিজ্ঞতার জন্ম দেয় (বিয়ার্ডসলি ১৯৮২)। এখানে ‘মূল্য’ গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে পপুলার ফর্মুলাভিত্তিক সংজ্ঞাটি দিয়েছেন জর্জ ডিকি। ডিকির সংজ্ঞা সার্কুলার, কিন্তু তার মতে সেটা তার দুর্বলতা না বরং শক্তি। এই সংজ্ঞার ভিত্তি শিল্পজগৎ, বিজ্ঞানজগতের মতোই একটা ঐতিহাসিক ও সামাজিক শিল্পজগৎ আছে যার সীমানার ভিতরে আর্ট উৎপাদন উপভোগ ও সমালোচনা করা হয়। বিজ্ঞানজগতের যেমন কিছু নীতি আছে, শিল্পজগতের তেমন কিছু রীতি আছে। তাই আর্ট যা শিল্পী শিল্পজগতের রীতি বুঝে তৈরি করেন তাদের কাছে উপস্থাপনের জন্য যারা সেসব রীতি বুঝে সেই জগতের সদস্য হয়েছেন। ফাংশন ও ফর্মুলার সাথে আর্ট হওয়ার আরেকটা শর্ত আরোপ করা যায়: ইতিহাস। শিল্পজগতের ভিতরে ফর্মুলা ও ফাংশন মেনে বানানো কোনকিছুও তখনি আর্ট হয় যখন তাকে সেই জগতের ইতিহাসে একটা নির্দিষ্ট জায়গা দেয়া যায়। ফাংশন ফর্মুলা ও ইতিহাস একসাথে করলে প্রায় সব শিল্পের পরিবার খুঁজে বের করা সম্ভব, তা হোক সাহিত্য, থিয়েটার, সিনেমা, ভিডিওগেম, কমিক্স, ফটোগ্রাফি, পেইন্টিং, স্কাল্পচার, ডিজাইন, আর্কিটেকচার, মিউজিক বা ডান্স।